বুধবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
EUR/USD পেয়ারের 1H চার্ট
বুধবার EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের মন্থর দরপতন অব্যাহত ছিল। ইউরোর এই দরপতন পুরোপুরি যৌক্তিক, যদিও ট্রেডাররা এখনো অধিকাংশ সামষ্টিক অর্থনৈতিক ইভেন্ট উপেক্ষা করে চলেছেন। বর্তমানে মার্কেট তার নিজস্ব নিয়ম অনুযায়ী চলছে। কখনো কখনো সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদন অনুযায়ী মুভমেন্ট হয় — আবার কখনো হয় না। যেমন, গতকাল মার্কেটের মুভমেন্ট সামষ্টিক প্রতিবেদনের ফলাফল অনুযায়ী হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ডিউরেবল গুডস অর্ডার প্রতিবেদনের ফলাফল প্রত্যাশার চেয়ে অনেক ভালো এসেছে এবং এর ফলস্বরূপ, ডলারের দর বৃদ্ধি পেয়েছে।
আমরা আরও উল্লেখ করতে চাই যে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে মার্কেটে যে অস্থিরতা তৈরি হয়েছিল, তা ধীরে ধীরে প্রশমিত হচ্ছে। ট্রাম্প এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো শুল্ক কার্যকর করেননি, মার্কিন অর্থনীতিতে সেরকম কোনো প্রভাবও পড়েনি, এমনকি ফেডারেল রিজার্ভের মুদ্রানীতিতেও কোনো পরিবর্তন আসেনি — অথচ ডলারের দর ইতোমধ্যে উল্লেখযোগ্য হারে কমে গেছে। এটি কিছুটা অযৌক্তিক মনে হচ্ছে। সুতরাং, আমরা আশা করছি ২ এপ্রিলের আগেই ডলারের মূল্য কিছুটা বৃদ্ধি পাবে।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট
বুধবার ৫ মিনিটের টাইমফ্রেমে বেশ কয়েকটি আদর্শ ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল। ইউরোপীয় এবং আমেরিকান সেশনে, এই পেয়ারের মূল্য 1.0797–1.0804 এরিয়া থেকে রিবাউন্ড করে এবং তারপর রাতের বেলায় 1.0726–1.0733 এরিয়া টেস্ট করে। ফলে একটি ট্রেড থেকেই আনুমানিক 40–45 পিপস লাভ করা সম্ভব ছিল। যদিও রাতের বেলার বাই সিগন্যালটি অনেক ট্রেডার এক্সিকিউট করেননি, তবে সেটি শেষ পর্যন্ত লাভজনক ছিল, কারণ ইউরোর দাম রাতে উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছিল।
বৃহস্পতিবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে মধ্যমেয়াদে EUR/USD পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা এখনো বজায় রয়েছে, যদিও এটি অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা কমে আসছে। যেহেতু মৌলিক এবং সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট এখনো ইউরোর তুলনায় ডলারকে বেশি সমর্থন যোগাচ্ছে, তাই আমরা এখনো এই পেয়ারের দরপতনের প্রত্যাশাই করছি। তবে ডোনাল্ড ট্রাম্প ধারাবাহিকভাবে শুল্ক সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত ও বিশ্ব নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্রের দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করে মার্কিন ডলারের ওপর চাপ সৃষ্টি করছেন। এর ফলে, মৌলিক ও সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট এখনো রাজনীতি ও ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতি কারণে আড়ালে রয়ে গেছে, তাই এখনই ডলারের মূল্যের শক্তিশালী ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার প্রত্যাশা করা হচ্ছে না।
বৃহস্পতিবার ইউরোর দরপতন অব্যাহত থাকতে পারে, কারণ ট্রেডাররা অবশেষে ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের প্রভাবে ডলার বিক্রি করা বন্ধ করেছে। টেকনিক্যাল পরিস্থিতি অনুযায়ী, এই পেয়ারের মূল্য অ্যাসেন্ডিং চ্যানেল ব্রেক করে নিচের দিকে চলে গেছে। ডলার অনেক বেশি সময় ধরে অতিরিক্ত বিক্রি হয়েছে এবং তা যথাযথ ভিত্তি ও কারণ ছাড়াই ঘটেছে। তাই, এই পেয়ারের মূল্যের কারেকশন অব্যাহত থাকার সম্ভাবনাই বেশি।
৫ মিনিটের চার্টে গুরুত্বপূর্ণ লেভেলগুলো হলো: 1.0433–1.0451, 1.0526, 1.0596, 1.0678, 1.0726–1.0733, 1.0797–1.0804, 1.0859–1.0861, 1.0888–1.0896, 1.0940–1.0952, 1.1011, 1.1048। বৃহস্পতিবার ইউরোজোনে কোনো গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট নেই। যুক্তরাষ্ট্রে চতুর্থ প্রান্তিকের চূড়ান্ত জিডিপি প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে, যা তুলনামূলকভাবে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন এবং এটি চূড়ান্ত প্রতিবেদন হওয়ার কারণে এটি মার্কেটে অপ্রত্যাশিত প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
1) সিগন্যালের শক্তি: সিগন্যাল গঠন করতে কতক্ষণ সময় নেয় তার উপর ভিত্তি করে সিগন্যালের শক্তি নির্ধারণ করা হয় (রিবাউন্ড বা লেভেলের ব্রেকআউট)। এটি গঠন করতে যত কম সময় লাগবে, সিগন্যাল তত শক্তিশালী হবে।
2) ভুল সিগন্যাল: যদি ভুল সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট লেভেলের কাছাকাছি দুটি বা ততোধিক পজিশন ওপেন করা হয় (যা টেক প্রফিট ট্রিগার করেনি বা নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌছায়নি), তাহলে এই লেভেলে প্রাপ্ত পরবর্তী সমস্ত সিগন্যাল উপেক্ষা করা উচিত।
3) ফ্ল্যাট মার্কেট: ফ্ল্যাট মার্কেটের সময়, যেকোন পেয়ারের একাধিক ভুল সিগন্যাল তৈরি হতে পারে বা কোন সিগন্যাল নাও গঠিত হতে পারে। যাই হোক না কেন, ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেয়া উচিত।
4) ট্রেডিং টাইমফ্রেম: ইউরোপীয় সেশনের শুরু এবং মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ট্রেড ওপেন করা উচিত। এর বাইরে সমস্ত ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হবে।
5) MACD সূচকের সিগন্যাল: প্রতি ঘন্টার চার্টে, শুধুমাত্র উল্লেখযোগ্য ভোলাট্যালিটি এবং প্রতিষ্ঠিত প্রবণতার মধ্যেই MACD থেকে প্রাপ্ত সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা একটি ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেল দ্বারা নিশ্চিত করা হয়।
6) নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয় (5 থেকে 15 পিপস পর্যন্ত), সেগুলোকে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।
7) স্টপ লস: মূল্য 15 পিপস উদ্দেশ্যমূলক দিকে মুভমেন্ট প্রদর্শন করার পর, ব্রেক-ইভেনে স্টপ লস সেট করা উচিত।
চার্টে কী কী আছে:
সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো হল সেই লেভেল যা কারেন্সি পেয়ার কেনা বা বিক্রি করার সময় লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে কাজ করে। আপনি এই লেভেলগুলোর কাছাকাছি টেক প্রফিট সেট করতে পারেন।
লাল লাইন হল চ্যানেল বা ট্রেন্ড লাইন যা বর্তমান প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং দেখায় যে এখন কোন দিকে ট্রেড করা ভাল হবে।
MACD (14,22,3) সূচক, হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন উভয়ই অন্তর্ভুক্ত করে, এটি একটি সহায়ক টুল হিসেবে কাজ করে এবং এটি সিগন্যালের উৎস হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা এবং প্রতিবেদন (সর্বদা নিউজ ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত থাকে) যেকোন কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের গতিশীলতাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অতএব, এগুলো প্রকাশের সময় অত্যন্ত সতর্কভাবে ট্রেডিং করতে হবে। চলমান প্রবণতার বিপরীতে আকস্মিকভাবে মূল্যের পরিবর্তন থেকে সুরক্ষিত থাকতে মার্কেট থেকে বের হয়ে যাওয়াই যুক্তিসঙ্গত হতে পারে।
নতুন ট্রেডারদের সর্বদা মনে রাখতে হবে যে প্রতিটি ট্রেড থেকে লাভ হবে না। একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ ও কার্যকর অর্থ ব্যবস্থাপনাই দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ের সাফল্যের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।